সংবাদ শিরোনাম:

শরীয়তপুর পদ্মায় বালু লুটের হিরিক,হুমকির মুখে পদ্মা সেতু সহ জাজিরা নড়িয়া ডান তীররক্ষা বাঁধ

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

মোঃফারুক আহম্মেদ মোল্লা:

শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীতে চলছে অবাদে বালু উত্তলন। রাত হলেই শুরু হয় কাটার ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু কাটার কাজ । হুমকির মুখে পরেছে পদ্মা সেতু সহ নড়িয়া ডান তীররক্ষা বাঁধ । ইতিমধ্যেই ভাংঙ্গন দেখা দিয়েছে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা জিরো পয়েন্টের বেরিবাধে। নদীর গর্ভে চলেগেছে পাইনপারা আহামেদ মাঝি কান্দির গ্রামের মসজিদ -মাদ্রসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ তিন শতাধিক বশত ভিটা। পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা বলছেন, অপরিকল্পিত ড্রেজিংএর ফলে যেকোন সময় বদলে যেতে পাড়ে নদীর গতি পথ। স্রোত এসে আঘাত হানতে পারে পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাধে।


জানাযায়, শরীয়তপুর জেলাটি পদ্মা-মেঘনার মত বড় বড় নদী দারা বেষ্টিত। প্রমত্ত পদ্মার ভাঙনে বিভিন্ন সময়ে বিলিন হয়েছে হাজার হাজার বসত বাড়ি, ফসলি জমি,সরকারি বেসরকারি স্থাপনা। নড়িয়ার ভাঙন রোধে পদ্মা নদীর তীররক্ষা বাঁধ নামে একটি প্রকল্প বাস্থবায়ন করেছে সরকার। জাজিরা ও সখিপুরে চলমান রয়েছে আরো দুটি প্রকল্প। পদ্মা নদীর ডান তীররক্ষা বাঁধের অপর প্রান্ত থেকেই নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর সাধুর বাজার চরআত্রা ,ভেদেরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন সিমানায় ও জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর বাবু চর,ও সিডাচর এলাকা থেকে প্রতিদিনই নদীর বালু কাটার (খননযন্ত্র) দিয়ে কেটে বলগেট জাহাজে ভরে দিচ্ছে একটি প্রভাব শালি মহল। প্রতিদিন নড়িয়া-জাজিরার পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ৫০টি খননযন্ত্র দিয়ে চলে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কাজ। এক একটি কাটার (খননযন্ত্র) প্রতি রাতে ৭৫ হাজার ফুট -থেকে ১ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করে। বলগেট জাহাজে লোড দিয়ে প্রতি ফুট বালু বিক্রি করা হয় ১.৫০থেকে ২টাকা দরে। বলগেট জাহাজে করে এই বালু জেলা ও জেলার বাহিরে বিবিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করা হয়। এই বালুই এলাকায় ভিটি বালু নামে পরিচিত। বিভিন্ন নিচু এলাকা ভরাটের কাজে ব্যাবহার করা হয় এই বালু। ভরাটের কাজে এর চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রভাব শালী একটি মহল নদীর বালু বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
নড়িয়া উপজেলার প্রশাসন কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে জেল জরিমানা করলেও এই বালু খেকোরা কোন ভাবেই ফিরছেন না বালু উত্তলন থেকে।
স্থানীয় প্রভাব শালী অসাধু সিন্ডিকেট বিভিন্ন দলের নামভাঙ্গীয়ে বালু তোলায় মেতে উঠেছেন। পদ্মার বালু বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা লুফে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ চক্রটি।
স্থানীয় এলাকা বাসিরা একাধিকবার বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেস, মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেও কোন ফল পায়নি। বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন অনেকেই। বালু খেকোরা স্থানীয় ভাবে প্রভাশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।
বালুদস্যু সিন্ডিকেট সাথে জড়িত থাকা ব্যাবসায়ি রফিক খা বলেন, আমরা ৪টা চালাই আমার সাথে উজ্জ্বল, বাবুরচর থেকে সুরেশ্বর ঘাট পর্যন্ত অনেকেরই আছে ,দেলোয়ার খা ৩টা,জসিম মল্লিক ৬টা,ফিরোজ খান ৩টা,রিপন শেখ, আজহা শিকারি, সোহাগ,নুরুজ্জামান শেখ, শোভন খান,দিলু খান,সহ সকলের আলাদা আলাদা আছে কিন্তু প্রশাসনিক সমস্যার কারণে উজ্জলের নামই বলি ও সকলের সাথে যোগাযোগ করে।
নৌ পুলিশের দুইটি পুলিশ ফারির একটি নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর ফারি ও জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাটে অবস্থিত। ফারি দুটির ১০ কিলোমিটার মধ্যে চলে বালু উত্তলন।তাদের নিরবভূমীকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, পদ্মার ভাঙন রোধে নড়িয়ায় ডানতীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। আরো দুটি বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। যতি বাঁধের কাছ থেকে বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে বাঁধ গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরিকল্পিত বালুউত্তোলন নদীর গতি পথও বদলে দেয় অনেক সময়। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
নড়িয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, শরীয়তপুরে নড়িয়ায় পদ্মা নদিতে দুই দফায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারী -১টি কাটার সহ ৮ জনকে আটক করা হয়েছে -এর আগে অভিযান চালিয়ে ১৭ জন বালুদস্যু কে আটক করে -১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ বলেন পদ্মা নদীর বাঁধ রক্ষার সার্থে অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করতে না পারে সেই লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নৌ-পুলিশ সুপার চাদপুর অঞ্চল সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, মুঠো ফোনে জানান, রাতের আধারে তারা বালু উত্তোলন করে। আমরা প্রাই অভিযান পরিচালনা করে থাকি। আমাদেরও জনবল কম।
পদ্মা নদীতে বালু উত্তলন কিছুতে করতে দেওয়া হবেনা। আমরা এই ব্যাপারে সোচ্চার রয়েছি।

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *