স্পোর্টস ডেস্ক:
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট পায়নি জিম্বাবুয়ে। তাদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সেই অর্থে খুব একটা কাজে লাগবে না। তারপরও বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে কম্বিনেশন খুজে পেতে ব্যর্থ হওয়া বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে পাঁচ ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ। শুক্রবার বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচটিতে জয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেখ মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ে ১২৪ রানে অলআউট হয়। অল্প রানে জিম্বাবুয়েকে বেঁধে ফেলার পর বাংলাদেশও ২৮ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে। অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে বল হাতে জিম্বাবুয়েকে ধসিয়ে দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেওয়ায় তাসকিন হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
সৌম্য সরকারকে বিশ্বকাপ দলে রাখতেই মূলত দল ঘোষণায় বিলম্ব করছে বিসিবি। যদিও আইসিসির কাছে গত ১ মে দলের সদস্যদের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে এই দলটি কোনও কারণ ছাড়াই আগামী ২৫ মে পর্যন্ত অদল-বদল করতে পারবে নির্বাচকরা। এই সুযোগটাই মূলত নিয়েছে বোর্ড।
জিম্বাবুয়ে সিরিজ মূলত তিন ক্রিকেটারের জন্য বিশ্বকাপ দলে ঢোকার মঞ্চ- পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ ও সাইফউদ্দিন। শুক্রবার জুনিয়র তামিম ও সাইফউদ্দিন প্রথম পরীক্ষায় পাশ করে গেছেন। এদিন জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। লম্বা সময় ধরেই সাদা বলের ক্রিকেটে ছন্দহীন তিনি। আজকে ৩ বলে ১ রান করে বিদায় নিয়েছেন এই ওপেনার।
দ্বিতীয় উইকেটে অভিষিক্ত তানজিদ ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে ৫২ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন। দুইবার বৃষ্টিতে খেলায় বিঘ্ন ঘটলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটিতে এর প্রভাব পড়েনি। বৃষ্টি থামার পর ক্রিজে নেমেই বিদায় নেন শান্ত। ২৪ বলে ২১ রান করেন তিনি। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছেন জুনিয়র তামিম। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে ৩৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৯ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। তানজিদ ৬৭ ও হৃদয় ৩৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
অভিষেকে ম্যাচে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখান তানজিদ। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে জুনায়েদ সিদ্দিকী খেলেছিলেন ৭১ রানের ইনিংস। শুক্রবার তানজিদ খেলছেন ৬৭ রানের ইনিংস। ৪৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান এই ওপেনার। তানজিদের এই ইনিংসের পর সৌম্য কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লো। স্বাভাবিকভাবেই তার এই ইনিংসের পর ইনজুরি থেকে মাত্র ফিরে আসা সৌম্যকে নিয়ে যেতে দ্বিতীয়বার ভাববে বাংলাদেশ দল।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ওভারেই ভেঙে যায় উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় বলে ক্রেইগ আরভিন বোল্ড হন শেখ মেহেদী হাসানের স্পিনে। জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ওপেনার দুই বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি। এরপর দেড় বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই সাফল্য পান সাইফউদ্দিন।
১ উইকেটে ৩৬ রান করা জিম্বাবুয়ের স্কোর ৪ উইকেটে ৩৬ রান। পঞ্চম ওভারের শেষ বল থেকে টানা তিন বলে উইকেট হারায় সফরকারীরা। সাইফউদ্দিনের বলে গাম্বি ক্যাচ দেন তাসকিনকে। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম দুই বলে আরও দুই ব্যাটার ক্রিজে ফেরেন। মাহমুদউল্লাহর থ্রোতে জাকের আলী ভেঙে দেন ব্রায়ান বেনেটের উইকেট। প্যাডল সুইপ করতে গিয়ে সিকান্দার রাজা তাসকিনের শিকার হন। এভাবে বাংলাদেশের বোলারদের একের পর এক আক্রমণের শিকার হয় জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা।
৪১ রানে সাত উইকেট হারানোর পর জিম্বাবুয়ের পাল্টা জবাব কিছুটা হলেও অবাক করার মতো ব্যাপার। ইনিংসের শেষ বলে ওয়েলিংটন মাসাকাদজা রান আউট হলে সফরকারীরা ১২৪ রানে অলআউট হয়েছে। ক্লাইভ মাদান্দে সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলেছেন।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাসকিন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। মেহেদী নেন দুটি উইকেট। দেড় বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে নিজের জাত চেনাতে সময় নেননি পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন।