সংবাদ শিরোনাম:

মানবতাবিরোধী অপরাধে আটক মোকলেছুর রহমান তাঁরা সহ ৩ জনের মুক্তির দাবিতে স্বজন ও উপজেলা সর্বস্তরের জনগণের মানববন্ধন

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

আইনুল নাঈম:

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলা নকলা উপজেলা সাবেক মেয়র মোকলেছুর রহমান তাঁরা, এ্যাডভোকেট এ,কে,এম আকরাম হোসেন ও এসে এমন আমিনুল হক ফারুক এর মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজ সহ নকশা উপজেলার সর্বস্তরের জনগন গতকাল রবিবার সকাল ১১ টায় নকলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সামনে এ মানববন্ধন শুরু হয়। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
তাদের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনীতিসহ নানা দ্বন্দ্বের বলি তাদের স্বজনরা। টাকার বিনিময়ে এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদের সাজা এবং গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা তার স্বৈরশাসনকে দীর্ঘায়িত করতে বিরোধী দলের নেতাদের ফাঁসি দিয়ে ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে নিরীহ মানুষকে এই ট্রাইব্যুনালের কাঁচামাল বানিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে বন্দি রাখা হয়েছে।
তারা আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম হয়নি এমনকি সে সময় যাদের বয়স ১০ বছর ছিল, তাদেরও আসামি করা হয়েছে।
দ্রুত ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে মিথ্যা মামলায় ভুক্তভোগীদের খালাস দেওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ অংশ নেয়া হাজার হাজার মানুষ।
মানববন্ধন শেষে আইন উপদেষ্টা বরাবর আসামিদের মুক্তির দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেন ট্রাইব্যুনালের সব প্রসিকিউটর।
এর আগে ২২/০৬/২৩ বুধবার ময়মনসিংহ কতোয়ালি থানাধীন ধোপাখোলা এলাকা থেকে মোকলেছুর রহমান তাঁরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকে গ্রেপ্তার করেন ময়মনসিংহ র্যাব-১৪।
১১/০২/২৪ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতের মামলায় ৩ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
নকলা পৌরসভার কুর্শাবাদাগৈড় খইড়াপাড়া মহল্লার সাবেক পৌর মেয়র মোখলেছুর রহমান তারা ও বাজারদি মহল্লার এফএম আমিনুজ্জামান ফারুক এবং টালকি ইউনিয়নের বিবিরচর গ্রামের একেএম আকরাম হোসেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা বর্তমানে কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
২০১৭ সালের ২৬ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে নকলা উপজেলার ৪ আসামির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কমিটি করে ছিলেন ।একই বছর ৩১ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল।
পরে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। এদের মধ্যে বিচার চলাকালীন নকলা পৌরসভার কুর্শা মহল্লার ডা. এমদাদুল হক খাজা কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় মারা যান।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়—এই ৩ আসামি মুসলিম লীগের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাঁরা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাঁরা নকলা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।
১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার দিন ধার্য করেন। এর আগে ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলাটির প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন—প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নকলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক খোরশেদ আলম দেশ বার্তাকে বলেন,শেখ হাসিনা তার স্বৈরশাসনকে দীর্ঘায়িত করতে বিরোধী দলের নেতাদের ফাঁসি দিয়ে ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে নিরীহ মানুষকে এই ট্রাইব্যুনালের কাঁচামাল বানিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে বন্দি রাখা হয়েছে।স্থানীয় রাজনীতিসহ নানা দ্বন্দ্বের বলি বানিয়ে এমন নিরিহ লোকজন ও তাদের স্বজনরা। টাকার বিনিময়ে এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদের সাজা এবং গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *