সংবাদ শিরোনাম:

ঢামেক হাসপাতালে জরুরি সেবা বন্ধ, চিকিৎসার অভাবে বিপাকে শত শত রোগী

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

ইসলাম সবুজ:

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধর এবং জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের প্রতিবাদে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে শতশত রোগী।
মনুষ্য রোগীরা জরুরি সেবা বন্ধ থাকায় কোনো প্রকার চিকিৎসা সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে দেখা যায়, চিকিৎসার জন্য শতশত রোগীর ভিড়। অনেক রোগী চিকিৎসার আশায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
মাদারীপুর থেকে ভোর রাতে রওনা দিয়ে গলায় ক্যান্সার আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে ঢামেকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন শিল্পী খাতুন। প্রথমে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে কর্তব্যরত ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে ঢামেকে ভর্তির পরামর্শ দেন। ডাক্তারদের মতে, জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন না করলে যেকোনো মুহূর্তে শ্বাস বন্ধ হয়ে তার বাবা মারা যেতে পারেন।
সকাল প্রায় নয়টার দিকে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আসেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বাবাকে ভর্তি করাতে না পেরে হতাশ হয়ে জরুরি বিভাগের সামনে বসে আছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাতীয় দৈনিক দেশবার্তার রিপোর্টারকে শিল্পী খাতুন বলেন, “আমার বাবার গলায় টিউমার হয়েছিল। অপারেশন করার পরে সেই ক্ষত জায়গায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। এতে শ্বাসনালীতে সমস্যা হচ্ছে, মাঝে মাঝে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সকাল নয়টার দিকে এসে দেখি জরুরি বিভাগে কোন ডাক্তার নেই। কেউ ভর্তি নিচ্ছে না। যদি বাবাকে ভর্তি করতে না পারি তাহলে অপারেশন করাতে পারবো না, আর যদি অপারেশন করাতে না পারি তাহলে আমার বাবাকে বাঁচাতে পারবো না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা তো সাধারণ মানুষ। আমাদের তো কোন দোষ নেই, তাহলে আমরা কেন চিকিৎসা পাব না?”
এদিকে ঝিনাইদহ থেকে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার ঢামেকে এসেছেন মরিয়ম। এখনো স্বামীকে ভর্তি করাতে না পেরে অসহায়ভাবে হাসপাতালের এদিক-সেদিক ঘুরছেন তিনি।
মরিয়ম অভিযোগ করে বলেন, “এভাবে যদি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকে তাহলে আমরা গরীব মানুষ কোথায় যাব? আমাদের তো অত টাকা নেই যে অন্য হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাবো।”
উল্লেখ্য, শনিবার ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধর এবং জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসকরা সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। সেই ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার সকাল থেকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে এ সমস্যার সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ আশা করছে, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে চিকিৎসাসেবা চালু করবে

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *