আইনুল নাঈম:
১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার শেরপুর জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ময়মনসিংহের রেঞ্জ ডিআইজি ড. মো. আশরাফুর রহমান জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে পুলিশ পুরো উদ্যমে কাজ শুরু করবে। তিনি বলেছেন, এরইমধ্যে পুলিশের টহল জোরদার করা হচ্ছে। আতঙ্ক কাটাতে প্রয়োজনে পুলিশ সদস্যের এক থেকে অন্য থানায় বলদলি করা হবে, সকল পুলিশ সদস্যদের মাঠে নামানো হবে। মূল কথা, আমরা পুলিশের চেনা আচরণে পরিবর্তন আনতে চাই। আগের মতো দলকানা পুলিশ থাকবে না বলেও তিনি জানান।
সভায় সাংবাদিক নেতাদের বক্তব্যের পরীপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশ কেন কাজ করছে না, তা আপনারা বোঝেন। আমরা চেষ্টা করছি, কাজ করছি। অনেক পরিবর্তন দেখবেন। পুলিশের প্রতি জনগণের যে আস্থা নষ্ট হয়েছে, আমরা তা ফিরিয়ে আনতে চাই। আইনের ধারায় যা আছে, পুলিশ হবে তা। কোনো বাধায় আমরা পিছ পা হবো না। তিনি আরও বলেন এখন থেকে “পুলিশ বাদি হয়ে আর কোন মামলা নেওয়া হবে না”। মামলায় কোন সাধারণ নাগরিক যাতে হয়রানি শিকার না হয় সে ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দেয়া হবে। যেকোনো মামলা তদন্ত করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীমান্তে চুরা চালান ও মাদকের বিষয়ে ময়মনসিংহের রেঞ্জের সীমান্তবর্তী প্রত্যেকটি থানায় পুলিশ সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থায় থাকবে। আপনাদের (সাংবাদিক) কলমের পূর্ণ শক্তির ব্যবহার চাই। দেশের মানুষ বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। ভেঙ্গে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো আমরা মেরামত করতে চাই। আমি শেরপুর সদর থানায় গিয়ে দেখেছি ভঙ্গুর একটা অবস্থা । থানায় যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে সব মহলের সহযোগিতা নিয়েই আমরা কাজ করতে চাই।
তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। গুম, খুনসহ সব অপরাধ বিবেচনায় আনতে হবে। ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার বিস্ফোরণ, দীর্ঘদিনের প্রেক্ষাপট। এতে মানুষ বাকরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। আমরা সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের প্রতিও সম্মান ও সমবেদনা জানাচ্ছি।
মতবিনিময় সভায় জেলার নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জেলার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে গণমাধ্যমসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে চাই। শহরের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নিরাপদ শেরপুর গড়তে চাই। মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কাকন রেজা, রফিক মজিদ, আদিল মাহমুদ উজ্জল, আবুল হাশিম, মারুফুর রহমান ফকির, ইমরান হাসান রাব্বি প্রমূখ ।
ওইসময় শেরপুর জেলা পুলিশের সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ডের (পুলিশ সুপার) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ খোরশেদ আলম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), সহকারী পুলিশ সুপার ( স্টাফ অফিসার টু ডিআইজি ) এস এম আসিফ আল হাসানসহ জেলা পর্যায়ে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।